বই | পুরোনো কৌতুক |
---|---|
লেখক | মুরাদুল ইসলাম |
প্রকাশনী | আদর্শ |
মূল্য | ২০০৳ |
প্রকাশকাল | ২০১৮ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | ১০৩ |
ঘরানা | থ্রিলার |
“পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো কৌতুক কি জানো? ওল্ড জোক? মানুষ। মানুষই হলো কৌতুক।”
কাহিনী সংক্ষেপ
বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত নিয়ে গবেষণাধর্মী প্রজেক্ট এর কাজে বাংলাদেশে এসেছেন ফেইন্ট মাইকস। ফিন নামেই পরিচিতরা তাকে ডাকে। বাংলাটা ভালোই বলতে পারেন, লিখতে গেলেই যা একটু বাধে আর কি! বাংলাদেশে ফিন এর চেনাজানা বলতে গুটিকয়েক মানুষ। এর মধ্যে রয়েছে তার সহকর্মী এবং ভালো বন্ধু ‘অপু’, একজন নিহিলিস্ট, যে প্রতিরাতেই মদ খেয়ে টালমাটাল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। এরপরে মইনুদ্দিন আরিফের প্রসঙ্গে আসা যাক। ইনি ফিন এর পাশের এপার্টমেন্টে থাকেন। উগ্র কমিউনিস্ট, জেল খেটেছেন লম্বা সময়, বর্তমানে চুপিসারে কী কী যেন করে বেড়ান! আরও একজন আছেন, ইনি বিদেশিনী। ফিন এর রিসার্চ টিম এর প্রধান, সুন্দরী এবং বন্ধুসুলভ।
ঢাকার পথেঘাটে খুন রাহাজানি ঢাকাবাসীদের কাছে পুরোনো হলেও ফিনের কাছে একদমই নতুন। চোখের সামনে একজনকে খুন হতে দেখে সে। খুনিকে সরাসরি দেখতে না পেলেও সে যে কালো পোশাক এবং মাস্ক পরিহিত ছিলো এটুকু বলা যাচ্ছে নির্দ্বিধায়। ভিক্টিম এর খোঁজ করতে গিয়ে সে নিজের হাতেই পুলিশের হাতকড়া পরিয়ে বসে, প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পরে খুনের তদন্তে। অবশ্য কিছুদিন পর পুলিশ তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে। কিন্তু এরই মধ্যে খুনিকে খুঁজে বার করার নেশা পেয়ে বসে ফিন কে। খুনের ধরণ মোটেও পুরোনো নয়, একইভাবে বছরখানেক ধরে খুন হয়ে আসছে। তাই পুলিশেরও মাথাব্যাথার কারণ এই খুনি। খুনের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ায় মিডিয়ার নজরে আসে ফিন। সেই সূত্রে মনীষা নামের একজন উগ্র নারীবাদীর সাথে পরিচয় হয় তার।
খুনের তদন্তে যতই সে ডুবতে থাকে ততই ঘোলা হতে থাকে জল, কে আসলে খুনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না। উল্লেখিত সব চরিত্রকেই খুনি মনে হতে থাকে তার। এরই মাঝে কালো পোশাকে ঢাকা সেই ব্যক্তি তাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। কে সেই ব্যক্তি? কেনইবা খুনগুলো করছে সে?
মতামত
ছোট, তবে উপভোগ্য একটা থ্রিলার। খুব আহামরি রকমের থ্রিলার মনে হয় নি, যেমনটা হয়ে থাকে থ্রিলারের ক্ষেত্রে আবার মন্দ-ও বলা চলে না। বছরখানেক আগে এই থ্রিলারের ভালো কিছু ফিডব্যাক পাওয়ায় পড়ে দেখার সাধ ছিলো, বাতিঘরের বাইরে থ্রিলার তেমন পড়া হয় না আমার তাই আগ্রহটা ছিলো তীব্র। বেশ কিছু চরিত্র স্থান পেয়েছে এই বইয়ে। এত চরিত্রের মধ্যে আসল খুনিকে বের করতে গেলে গোলকধাঁধায় ঢুকে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। বইয়ের শেষ অংশ পর্যন্ত জানতে চাওয়ার আগ্রহটা ধরে রেখেছিলো। মেদহীন, মেপে মেপে লেখা হওয়ায় বিরক্তি ছাড়াই এক বসায় পড়ে ফেলেছিলাম। মুরাদুল ইসলামকে আমি মূলত চিনি তার ব্লগের কারণে। তার ব্লগ আমার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে অনেক আগেই। তাই তার ভিন্ন রকম চিন্তাধারা নিয়ে লেখার সাথে তাই পরিচয় আছে। ‘পুরোনো কৌতুক’ যতটা না থ্রিলার তার থেকেও বেশি সেইসব চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ। প্রতিটা অধ্যায় শুরু করেছেন কবিতার লাইন দিয়ে, প্রতিটা চরিত্রেই ভিন্ন রকম দর্শনবোধ এর উদাহরণ উপস্থিত।